চিকিৎসার টাকা চাওয়ায় স্বামীর মারধরে স্ত্রীর মৃত্যু
বি এ রায়হান, গাজীপুর:
গাজীপুরের শ্রীপুরে চিকিৎসার জন্য টাকা চাওয়ায় স্বামীর মারধরের শিকার হয়ে সুইটি আক্তার (২৪) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গৃহবধূ সুইটি উপজেলার ধামলই গ্রামের আব্দুস সোবাহানের মেয়ে।
রোববার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়। হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম (২৮) উপজেলার সোনাব গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। তাদের ৮বছরের সংসার জীবনে সিয়াম নামের পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। এঘটনায় নিহতের বড় ভাই আসাদ মিয়া বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিহতের পরিবার জানায়, ৮ বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে নুরুল ইসলাম ও সুইটির বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে সুইটিকে অত্যাচার নির্যাতন করতো স্বামী নুরুল ইসলাম। ছয় মাস যাবৎ সুইটির শারীরে নানা ধরণের অসুস্থতা দেখা দিলে তার বাবা তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করান। তবে টাকা পয়সার অভাবে ভালো কোন চিকিৎসা কেন্দ্রে সে চিকিৎসা করাতে পারছিল না। গত রোববার (২১মার্চ) সুইটি মাওনা চৌরাস্তার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। আর এ জন্য স্বামী নুরুল ইসলাম চিকিৎসার জন্য টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্বামীর মারধরে মাথায় আঘাত পেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন সুইটি। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সুইটিকে মারধরের অভিযোগে তার পরিবার থানায় অভিযোগ দিলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অভিযুক্ত স্বামী।
গত ২৭ মার্চ (শনিবার) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুইটিকে দেখতে যান। সেখানে গিয়ে ফের কথা কাটাকাটি হয় তাদের। পরে স্বজনদের সামনেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুইটিকে মারধর করে দ্রুত হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম। অবশেষে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (রোববার) সন্ধ্যায় মারা যায় সুইটি।
নিহতের বড় ভাই আসাদ মিয়া বলেন, কতটা পাষন্ড হলে এভাবে অসুস্থ স্ত্রীকে মারধর করতে পারে একজন স্বামী। প্রথম দফা মারধরের পর দ্বিতীয় দফায় তাকে হাসপাতালেও মারধর করেন। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান নিহতের পরিবার।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু হবে। সাথে অভিযুক্তকে আটকে অভিযান অব্যাহত আছে। নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।